শরীয়তপুর সদরের কীর্তিনাশা নদীতে ডাকাতির পর পালানোর সময় স্থানীয় জনতার ধাওয়ার মুখে পড়ে ডাকাত দলের সদস্যরা। এ সময় তারা গুলি ও ককটেল ছুড়লেও জনতার প্রতিরোধের মুখে একটি ইটভাটায় আশ্রয় নেয়। পরে গণপিটুনিতে দুইজন নিহত হয়।
গতকাল শুক্রবার রাতে শরীয়তপুর সদরের ডোমসার ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া এলাকায় কীর্তিনাশা নদীর তীরে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, ডাকাতির পর পালানোর সময় স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে পড়ে ডাকাত দলের সদস্যরা। এ সময় তারা গুলি ছুড়লে আটজন আহত হন। পরে স্থানীয়দের গণপিটুনিতে পাঁচজন ডাকাত আহত হয় এবং দুজন নিহত হয়।
মডেল থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজারচর এলাকায় কীর্তিনাশা নদীতে বালু পরিবহনের নৌযান (বাল্কহেড) ডাকাতির চেষ্টা করে ১০-১২ জনের একটি সশস্ত্র দল। স্থানীয় শ্রমিকরা বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রতিরোধ গড়ে তুললে ডাকাতেরা গুলি ও ককটেল ছুড়ে পালিয়ে যায়।
খবর ছড়িয়ে পড়লে শরীয়তপুরের দাদপুর থেকে ডোমসার তেঁতুলিয়া পর্যন্ত নদীর দুই তীর ও নদীতে নেমে স্থানীয় লোকজন ডাকাতদের ধাওয়া করেন। এ সময় ডাকাতেরা পাল্টা গুলি ও ককটেল হামলা চালায়।
ধাওয়া খেয়ে ডাকাত দলটি ডোমসার তেঁতুলিয়া এলাকায় একটি ইটভাটায় আশ্রয় নেয়। তখন স্থানীয় লোকজন ইটভাটা ঘেরাও করে তাদের আটজনকে ধরে ফেলে এবং গণপিটুনি দেয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত ডাকাতদের উদ্ধার করেন।
পরে রাত একটার দিকে আহত ডাকাতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে দুজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। নিহতদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হয়নি।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মুনতাসির খান জানান, “রাত সাড়ে ১০টার দিকে ডাকাতদের গুলিতে আহত চারজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
এরপর রাত ১২টার পর তিন দফায় আরও সাতজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে দুজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
পুলিশের বক্তব্য
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, “স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে ডাকাতেরা গুলি চালায়। পরে গণপিটুনিতে দুজন নিহত হয়। তাদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থল থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি স্পিডবোট ও একটি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।”