যশোরে নগদ কোম্পানির অর্থ ছিনতাইয়ের ঘটনায় আটক প্রাইভেটকার চালক মো. সাজুর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠে আসছে। ছিনতাইয়ে সরাসরি জড়িত সাতজনের চক্রের অন্যতম সদস্য সাজুকে আটক করার পর গোয়েন্দা পুলিশ জানতে পারে—এটি ছিল একটি পরিকল্পিত অপরাধ। পাশাপাশি, তার বিরুদ্ধে অতীতেও ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক ভুক্তভোগী।
গত ১৭ জুন সকালে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার কুয়াদা জামতলা মোড়ে প্রকাশ্যে নগদ কোম্পানির ৫৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নগদ যশোরের ম্যানেজার রবিউল ইসলাম ও চালক সাজুর বক্তব্যে অসামঞ্জস্য দেখা দিলে পুলিশ তাদের হেফাজতে নেয়। এরপর ডিবি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাজু স্বীকার করেন, নগদের কোটি টাকার লেনদেনের সঙ্গে জড়িত থাকায় তার লোভ তৈরি হয় এবং তিনি পরিকল্পিতভাবে ছিনতাইয়ের ছক আঁটেন।
এই ছক বাস্তবায়নে তিনি আরও ছয় সহযোগীকে যুক্ত করেন। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন: ড্রাইভার ইউসুফ আলী সাজু, ঝিকরগাছার বাকড়া দিনগানা গ্রামের রনি গাজী, খোষালনগরের সাগর হোসেন ও সোহেল রানা, দিকদানা গ্রামের সুজন ইসলাম, ইমাদুল গাজী ও নাসিম গাজী। পুলিশ তাদের কাছ থেকে ৩২ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে।
সাজুর অতীত ছিনতাইয়ের তথ্য প্রকাশ
ডিবি পুলিশের হাতে আটকের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে সাজুর ছবি প্রকাশিত হলে একাধিক ব্যক্তি তাকে পূর্বের ছিনতাই ঘটনার সঙ্গে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করেন। গত ১১ জুন যশোর শহরের গাড়িখানা রোড এলাকায় এক ব্যক্তির কাছ থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহকারী ভুক্তভোগী মোল্লা অবায়দুর রহমান তার ছবি দেখে সনাক্ত করেন সাজুকে।
তিনি জানান, ওইদিন চারজন যুবক তার রিকশার গতিরোধ করে হুমকি ও গালিগালাজ করে তার কাছ থেকে ৯ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় তিনি থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পরে ডিবি পুলিশের মাধ্যমে তিনি নিশ্চিত হন, ওই ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত ছিল সাজু নিজেই।
পুলিশের তদন্ত ও সন্দেহের দিক
এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার জানিয়েছেন, মূলত ছিনতাই হওয়া টাকার পরিমাণ ৩৫ লাখ এবং এর মধ্যে ৩২ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পুলিশ খতিয়ে দেখছে, এই চক্রের পেছনে অন্য কেউ—বিশেষ করে নগদ কোম্পানির যশোর ডিস্ট্রিবিউটর বা ভেতরের কেউ জড়িত কিনা।
সাজু ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আরও কোনো অপরাধের ইতিহাস আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আরও বিস্তৃত চিত্র সামনে আসার সম্ভব না,