কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর মো. তৌহিদুল ইসলাম (৪০) নামে এক যুবদল নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের দাবি, তার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। চিকিৎসকরাও শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন।
তৌহিদুল ইসলাম কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের একটি শিপিং এজেন্টে চাকরি করতেন। বাবার মৃত্যুতে বাড়ি আসার কয়েকদিন পর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে যৌথ বাহিনী তাকে আটক করে।
আটকের বিবরণ
তৌহিদুলের ভাই সাদেকুর রহমান জানান, বাবার কুলখানি উপলক্ষে রাত আড়াইটার দিকে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা সাদা পোশাকের পাঁচ যুবকসহ বাড়িতে প্রবেশ করে। তারা কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই তৌহিদুলকে ধরে নিয়ে যায় এবং পরিবারের সদস্যদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।
পরদিন সকালে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা আবার বাড়িতে অভিযান চালান, কিন্তু কিছুই উদ্ধার করতে পারেননি। সকালেও তৌহিদুল তাদের গাড়িতে নিস্তেজ অবস্থায় ছিলেন। পরে বেলা ১১টার দিকে সেনাবাহিনী তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তখন তিনি অচেতন ছিলেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নির্যাতনের অভিযোগ
পরিবারের অভিযোগ, তৌহিদুলকে আটকের পর নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। তার কোমর থেকে পায়ের নিচ পর্যন্ত প্রচণ্ড মারধরের চিহ্ন ছিল। শরীরজুড়ে কালো জখমের দাগ দেখা গেছে।
তৌহিদুলের স্ত্রী ইয়াসমিন নাহার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার স্বামী কোনো অপরাধ করেনি। তাহলে কেন তাকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হলো? আমার চারটা মেয়ে এত ছোট, আমি তাদের নিয়ে কীভাবে বাঁচব?’ তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
পুলিশ ও প্রশাসনের বক্তব্য
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সাইফুল মালিক জানান, তৌহিদুলকে যখন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়, তখন তিনি অচেতন ছিলেন। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা জিডির তথ্য পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
যৌথ বাহিনীর পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি।