যশোরে জুলাইযোদ্ধাদের চেক বিতরণে হট্টগোল, তালিকায় অসঙ্গতির অভিযোগ ছাত্রদের

আরো পড়ুন

যশোরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তালিকা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৪ মে) দুপুরে যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলার ‘সি’ ক্যাটাগরির ৬৬ জন আহত জুলাইযোদ্ধার প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়। তবে অনুষ্ঠানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তালিকা প্রণয়নে অসঙ্গতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ জানান।

তারা প্রশ্ন তোলেন—আলোচিত ‘জাবির ট্র্যাজেডিতে’ নিহতদের শহিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে কিনা এবং প্রকৃত আহতদের বাদ দিয়ে অপ্রাসঙ্গিক নাম কেন যুক্ত করা হয়েছে। বক্তব্যের এক পর্যায়ে ছাত্ররা ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ’ স্লোগান দেন এবং অনুষ্ঠানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

অভিযোগে যা উঠে এসেছে:
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্য সচিব মারুফ হাসান সুকর্ণ বলেন, “তালিকায় নূর ইসলাম নামে একজনকে আহত হিসেবে রাখা হয়েছে, অথচ সে কখনও আন্দোলনে আহত হয়নি। এ ধরনের আরও ১৫-২০ জনের নাম রয়েছে, যারা প্রকৃতপক্ষে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। এটি জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।”

আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল্লাহ আল মামুন লিখন বলেন, “আসল জুলাইযোদ্ধাদের সঙ্গে ভুয়া নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, “আন্দোলনে যারা সত্যিকারের আহত হয়েছে, তাদের অনেকের নামই তালিকায় নেই। অথচ আমরা কেউ তালিকায় নাম তোলার জন্য আবেদন করিনি। এখন দেখা যাচ্ছে, নাম আছে এমন অনেকেই আহতই নন।”

প্রশাসনের বক্তব্য:
জুলাই বিপ্লবে আহত ও শহিদ যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য ও ছাত্র প্রতিনিধি মেজবাহুর রহমান রামীম বলেন, “শুধু যশোর নয়, ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাঠানো তালিকাও যাচাই করে মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। যশোরের তালিকাও সেই প্রক্রিয়ার অংশ।”

যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, “তালিকা তৈরি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জেলা কমিটি শুধু যাচাই করেছে। কমিটিতে ছাত্র প্রতিনিধিরাও ছিলেন। তবু যদি কোনো অসঙ্গতি থেকে থাকে, তা সংশোধনের সুযোগ আছে।”

উল্লেখ্য, হট্টগোলের মধ্যেই অনুষ্ঠান শেষে চেক বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক রাসেল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজিবুল আলম, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হোসাইন সাফায়েত এবং প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন প্রমুখ।

 

আরো পড়ুন

সর্বশেষ