৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর পুলিশ বিভাগে ব্যাপক রদবদল হলেও যশোরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোতয়ালি থানা এখনো নতুন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পায়নি। বিগত সরকারের সময় নিযুক্ত ওসিকে মধ্য জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়, এরপর থেকে ওসির পদ শূন্য রয়েছে।
বর্তমানে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন ওসির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। একইসঙ্গে তাকে পরিদর্শক (অপারেশনস) এবং পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড কমিউনিটি পুলিশিং)-এর দায়িত্বও পালন করতে হচ্ছে। ফলে একজন কর্মকর্তার ওপর থানার চারটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পড়েছে, যা প্রশাসনিক কাজে চাপ সৃষ্টি করছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে দেশের থানাগুলোতে থাকা ওসিদের বদলি করা হয়। যশোরের ৯টি থানার ওসিও বদলির তালিকায় ছিলেন। ৮টি থানায় নতুন ওসি যোগ দিলেও একমাত্র কোতয়ালি থানায় এখনো নতুন ওসি আসেননি।
বদলির আদেশ অনুসারে, কোতয়ালি থানার তৎকালীন ওসি মো. আব্দুর রাজ্জাককে ঢাকায় এপিবিএনে বদলি করা হয়। তবে যশোরের পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধে তিনি কিছুদিন কোতয়ালিতে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু উপর মহলের চাপের কারণে গত ১৪ জানুয়ারি তিনি ঢাকায় সিসি নিয়ে এপিবিএনে যোগ দেন। এরপর থেকে থানার ওসির পদ শূন্য রয়েছে।
জেলা পুলিশ প্রশাসনের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) নুর-ই-আলম সিদ্দিকী জানিয়েছেন, এখনো কোতয়ালি থানায় নতুন ওসি নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
প্রশাসনিক সংকট
কোতয়ালি থানার গুরুত্ব বিবেচনায় এটি জেলা পুলিশের কেন্দ্রবিন্দু। কিন্তু ২ মাস ধরে ওসিসহ থানার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য থাকায় পুলিশি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড কমিউনিটি পুলিশিং) পদটিও দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। সপ্তাহখানেক আগে পরিদর্শক (অপারেশনস) দেবাশীষ রায় কুষ্টিয়ায় বদলি হওয়ায় সেই পদও ফাঁকা।
পুলিশ ফোর্সের সংকট
এক সময় এই থানায় প্রায় ৭০ জন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) কাজ করতেন। কিন্তু এখন উপ-পরিদর্শক আছেন মাত্র ২০ জন, সহকারী উপ-পরিদর্শক রয়েছেন ১৭ জন এবং ৬ জন শিক্ষানবিশ উপ-পরিদর্শক রয়েছেন, যারা যশোরে নতুন যোগ দিয়েছেন।
অতিরিক্ত দায়িত্ব ও ঘন ঘন বদলির কারণে থানার কর্মকর্তাদের মধ্যে চাপ ও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই থানায় দ্রুত ওসি নিয়োগ না হলে পুলিশি কার্যক্রম আরও ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।