পটুয়াখালীর মহিপুর উপজেলার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের মেহেরপুর গ্রামের বড়ইতলা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের (বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর) মরদেহ উদ্ধার করেছে কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ। মঙ্গলবার (১৩ মে) সকাল ১১টার দিকে স্থানীয়রা নদীতে মরদেহটি ভেসে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দিলে তা উদ্ধার করা হয়।
নিহতের পরনে ছিল শুধু একটি কালো প্যান্ট এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে পচন ধরে গেছে বলে জানায় পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে আতঙ্ক ও কৌতূহল
বড়ইতলা গ্রামের বাসিন্দা মো. রফিক বলেন, “নদীতে কিছু একটা ভাসতে দেখে প্রথমে মনে হয়েছিল কোনো প্রাণীর মৃতদেহ। কাছে গিয়ে দেখি মানুষের মরদেহ, এরপরই নৌ-পুলিশকে খবর দেই।”
ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয়দের মাঝে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। নদীতীরবর্তী এলাকায় বহু মানুষ ভিড় জমায় মরদেহটি একনজর দেখার জন্য।
মরদেহ ভেসে আসার সম্ভাব্য পথ নিয়ে বিশ্লেষণ
স্থানীয় মৎস্যজীবীদের ধারণা, মরদেহটি খাপড়াভাঙ্গা নদী থেকে কাটাভারানী খালের মাধ্যমে ভেসে এসে বড়ইতলা নদীতে পৌঁছাতে পারে। তারা জানান, নদীতে মাছ ধরার সময় এমন ভাসমান মৃতদেহ আগে একাধিকবার দেখা গেছে।
আইনি প্রক্রিয়া ও তদন্তের অগ্রগতি
কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর বিকাশ মন্ডল বলেন, “ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত চলছে এবং প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত কেউ নিখোঁজ রয়েছেন বলে থানায় কোনো অভিযোগ করেননি। আশপাশের থানাগুলোতে তথ্য পাঠানো হয়েছে, যাতে পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, “নদীপথে দুর্ঘটনার কারণে এমন ঘটনা অনেক সময় ঘটে থাকে। তবে এটি স্বাভাবিক মৃত্যু, আত্মহত্যা, না কি হত্যাকাণ্ড – তা নিশ্চিত হতে তদন্ত দরকার। প্রয়োজনে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের পরামর্শ দিয়েছি।”
পূর্বের অনুরূপ ঘটনা
স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, এ ধরনের ভাসমান মরদেহ অতীতে বর্ষা মৌসুমে কিংবা মাছ ধরার সময় নদীপথে নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে। ২০২২ সালে বড়বগী এলাকায় একইভাবে এক মৎস্যজীবীর মরদেহ উদ্ধার হয়েছিল।

