যশোর প্রতিনিধি
যশোর শহরের রেল স্টেশন এতিম খানা ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী হৃদয় হোসেন (১৮)।
বাল্যকালে পিতাকে হারিয়েছে। মা ইট ভাটা শ্রমিক। মায়ের সামন্য আয়ে চলে তার লেখাপড়া খরচ ও সংসার। পিতার মৃত্যুর পর ভিটা বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হয়ে হৃদয় ও তার মা আছিয়ার জায়গা হয় নানা বাড়ি সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের সিরাজসিংহা গ্রামে। সব কিছুই ঠিক চলছিলো এতোদিন। তবে, সম্প্রতি পত্তিক জমির ভাগ বঞ্চিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে একটি পক্ষ। জমির ভাগ চাওয়ায় তার পরিবারকে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন হুমকি। ইতিমধ্যে শহরের মাদ্রাসা ছেড়ে নানা বাড়িতে সময় কাটছে হৃদয়ের।
হৃদয়ের মা আছিয়ার বলেন, ৯ বছর আগে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তার স্বামী তোরাব আলী ও নোনদ সাবির খাতুনের মৃত্যু হয়। এরপর চাচা শ্বশুর নোয়াব আলী, হাসান ও নোনদায় শাহাদৎ হোসেন তাকে ও তার ছেলে হৃদয়কে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এরপর থেকে তিনি একই গ্রামে বাপের বাড়িতে ছেলেকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন। আর ছেলেকে ভর্তি করে দেন রেলগেট এতিম খানা ও হাফিজিয়া মাদ্রাসায়। দু’বছর আগে ছেলেকে নিয়ে তিনি শ্বশুর বাড়িতে যায় জমির ভাগ চাইতে।
কিন্তু ‘চাচা শ্বশুর নোয়াব আলী, হাসান ও নোনদায় শাহাদৎ হোসেন আবারও বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে জানায়, আর কোনো দিন জমির ভাগ চাইতে আসলে তার ছেলের ক্ষতি করা হবে। এ সময় তার কাছ থেকে ছেলের জীবনের বিনময়ে বিভিন্ন সময় টাকা আদায় করে ওই চক্র। সম্প্রতি বাড়ি করার জন্য জমি চাইতে গেলে বলে হয়েছে তাদের কোনো জমি নেই। মৃত্যুর আগে তার স্বামী সব জমি বিক্রি করে দিয়েছে তাদের কাছে।
আছিয়ার অভিযোগ, জমির ভাগ চাওয়ায় মাদ্রাসায় যাওয়া আসার সময় তার ছেলেকে বিভিন্ন ক্ষতি করার হুমকি দেয়া হচ্ছে। তাই ছেলের পড়ালেখা বন্ধ করে বাড়িতে বসিয়ে রেখেছি।
হৃদয় হোসেন বলেন, তার মাদ্রাসায় আসা যাবার পথে বিভিন্ন মানুষ তাকে গতিরোধ করে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বলে। এমনকি, তার মাদ্রাসায় এসেও তাকে হুমকি দেয়। এ জন্য ভয়ে মাদ্রাসা না যেয়ে বাড়িতে বসে আছে। আমি লেখা পড়া করতে চাই।
অভিযুক্ত নোয়াব আলী বলেন, তিনি কাউকে কোনো হুমকি দেননি। কারো কাছ থেকে কোনো টাকা নেননি। রামনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান লাইফ দু’পরিবারকে নিয়ে বসে জমি সমান ভাগে ভাগ করে দিয়েছেন।
রামনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান লাইফ জানান, পরিষদে আছিয়ার অভিযোগের ভিক্তিতে দু’পরিবারের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে। নতুন করে কারো কোনো অভিযোগ গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপ দাশ বলেন, খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। হৃদয় পরিবার থেকে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জাগো/আরএইচএম

