কাশ্মীরের পর্যটন এলাকা পহেলগামে হামলার ঘটনার পর থেকেই পাকিস্তানকে দায়ী করছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। পাশাপাশি কাশ্মীরের স্থানীয় মুসলমানদেরও সন্দেহের তালিকায় রাখছে মোদির দল বিজেপি। তবে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র—কাশ্মীরের মুসলিমরা প্রাণপণে হামলার শিকার হিন্দু পর্যটকদের উদ্ধার করেছেন।
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সাজাদ আহমেদ নামে এক মুসলিম যুবক একের পর এক আহত পর্যটককে কাঁধে করে উঁচু পাহাড় থেকে নিচে নামিয়ে আনছেন। পেশায় শাল বিক্রেতা সাজাদ হামলার দিন শাল বিক্রি করতে বের হয়েছিলেন। কিন্তু হামলার নির্মমতা দেখে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি ৫০ জনেরও বেশি পর্যটককে রক্ষা করেন।
এই ভিডিও প্রথম শেয়ার করেন ভারতীয় হিন্দুধর্মাবলম্বী প্রেমা যাদব। সামাজিক মাধ্যম ‘এক্স’-এ তিনি লিখেছেন, “এই সেই কাশ্মীরি, যিনি পিঠে করে কয়েক ডজন মানুষকে বাঁচিয়েছিলেন।”
আরও একটি ভিডিও শেয়ার করেন শিভাঙ্গী চৌধুরী নামের আরেক ভারতীয় নারী। সেখানে দেখা যায়, এক মুসলিম যুবক একটি শিশুকে বাঁচাতে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় বেয়ে নিচে নামছেন। শিভাঙ্গীর ভাষায়, “কাশ্মীরিরা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে পর্যটকদের এবং তাদের সন্তানদের বাঁচিয়েছেন। দুজন কাশ্মীরি মুসলিম প্রাণ দিয়েছেন, কিন্তু মিডিয়াগুলো এসব দেখায় না।”
তথ্য অনুযায়ী, ওই দিন সৈয়দ আদিল হোসেন শাহ নামে ২৮ বছরের এক মুসলিম ঘোড়া চালকও পর্যটকদের রক্ষার সময় প্রাণ হারান।
এসব মানবিক ছবি ও তথ্যের বিপরীতে ভারতীয় মূলধারার মিডিয়া কেবল মুসলিম বিদ্বেষ উসকে দিতে কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মোদি সরকার ও বিজেপি যেনো পরিকল্পিতভাবে কাশ্মীরি মুসলিমদের দায়ী করে গোটা ঘটনার মেরুকরণ ঘটাতে চাইছে। এমনকি কাশ্মীরে মুসলিমদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনাও ঘটেছে, যা পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক করে তুলেছে।
কেউ কেউ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, মোদি সরকারের উদ্দেশ্য যেনো কাশ্মীরকে ফিলিস্তিনের গাজার মতো দ্বিতীয় এক রণক্ষেত্রে পরিণত করা।