গত ২৪ ঘণ্টায় এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৯৬৬ জন নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৩১০ জনে পৌঁছেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ৪৫২ জন ঢাকার এবং বাকিরা ঢাকার বাইরের বিভিন্ন এলাকার। একই সময়ে ৭৯১ জন রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ বছর এখন পর্যন্ত ৬৩ হাজার ১৬৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৫৮ হাজার ৭২৯ জন ইতিমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা ডেঙ্গুর অব্যাহত বিস্তারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, বরং সারা বছরই দেখা দিচ্ছে। তিনি ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা ও জনসচেতনতা বাড়িয়ে কাজ হবে না। দক্ষ জনবল দিয়ে সঠিকভাবে জরিপ পরিচালনা করে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা রেকর্ড ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জনে পৌঁছায় এবং মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৭০৫ জন, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
ডেঙ্গুজ্বর একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ, যা এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ায়। সাধারণত ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার তিন থেকে পনেরো দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয়, যা জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, পেশি ও গাঁটে ব্যথা এবং ত্বকে ফুসকুড়ি অন্তর্ভুক্ত। কিছু ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক রক্তক্ষরণ বা ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে রূপ নিতে পারে। এডিস ইজিপ্টি মশা ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রধান বাহক।
ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রধান উপায় হলো এডিস মশার বংশবিস্তার রোধ করা এবং মশার কামড় থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা। এ জন্য মশার আবাসস্থল ধ্বংস, পানি জমে থাকা স্থানগুলো পরিষ্কার রাখা এবং শরীর ঢাকা পোশাক পরিধান করা গুরুত্বপূর্ণ।