১০০ টাকায় ২ পিস তরমুজ!

আরো পড়ুন

ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের দক্ষিণ চরপাতা গ্রামে ভ্যান গাড়িতে মাইকিং করে এক পিস ৫০ টাকা, দুই পিস ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন বিক্রেতা জামাল।

প্রতি বছরই তিনি মৌসুমে তরমুজ ব্যবসা করেন। এই মৌসুমে চৈত্রে টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে খেতে পচে যাচ্ছে তরমুজ। তাছাড়া বৃষ্টি হওয়ায় ক্রেতার চাহিদাও কমেছে। এজন্য মাইক নিয়ে গ্রামে নেমেছেন তরমুজ বিক্রি করতে।

গতকাল শনিবার (১ এপ্রিল) দুপুরে কথা হয় জামালের সঙ্গে। তিনি বলেন, ভোলার প্রায় সবগুলো তরমুজ খেত পানিতে ডুবে আছে। ভালোভাবে পাকার আগেই কাচাপাকা তরমুজ তুলতে হয়েছে চাষিদের। এমনকি অনেক খেতে তরমুজ পচেও গেছে। এজন্য মুনাফা তুলতে চাষিরা যে দামে পারছে বিক্রি করছে।

জামাল বলেন, গ্রামে গ্রামে ঘুরেও তরমুজের ক্রেতা পাচ্ছি না। মাঝারি সাইজের দুটি তরমুজ ১০০ টাকায়ও কিনতে চাইছে না মানুষ।

শুধু জামাল নয় ভোলা শহরের অনেক ব্যবসায়ী একই কথা জানান। তারা বলেন, কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ায় তরমুজের ব্যবসায় একেবারে ধস নেমেছে। ঠান্ডা আবহাওয়ায় তরমুজ কেউ কিনতে চাইছে না। তাছাড়া খেতে পানি জমে থাকায় চাষিরা বিপদে আছেন।

চরফ্যাশন উপজেলার চাষি ইছাহাক কাজী বলেন, ৩০০ শতাংশ জমিতে তরমুজ দিয়েছিলাম। ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টিতে অধিকাংশ তরমুজে দাগ পড়ে গেছে। অনেকগুলো পচে গেছে। বিক্রির জন্য পাইকার পাচ্ছি না। এ বছরের তরমুজে ৩ লাখ টাকা লোকসান।

ভোলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু হানিফ মোল্লা জানান, আমার ৫২ বছর বয়সে এ বছর প্রথম দেখলাম তরমুজের মেলা। দুই-তিনদিন ধরে মাইকিং করে গ্রামে গ্রামে তরমুজ বিক্রি করতে দেখছি। দুই সপ্তাহ আগে যে তরমুজ কিনেছি ১৫০ টাকায় এখন সেই সাইজের তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে ৭০ থেকে ৯০ টাকায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হাসান ওয়ারিসুল কবীর বলেন, যেকোনো বছরের তুলনায় এবার ভোলায় তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। এই মৌসুমে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ২৪৯ হেক্টর জমি। কিন্তু আবাদ হয়েছে ১৮ হাজার ৩৮৩ হেক্টর জমি। তবে বৃষ্টি কিছুটা বিপাকে ফেলেছে কৃষকদের। আমরা চেষ্টা করছি চাষিদের সাহায্য করার। হিসাবে মতে চলতি মৌসুমে ভোলা জেলায় ৯ লাখ ৫৫ হাজার ৯১৬ টন তরমুজ উৎপাদন হয়েছে। যার বাজারমূল্য হতে পারে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা।

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ