‘মদ্যপ’ অবস্থায় গ্রেপ্তার: যশোরে যুবলীগনেতা বহিস্কার

আরো পড়ুন

নিজস্ব প্রতিবেদক 

যশোর পৌরসভার কাউন্সিলর ও জেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে টাক মিলনকে ‘মদ্যপ’ অবস্থায় গ্রেপ্তারের ঘটনায় সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল এমপির সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ১৭ ফেব্রুয়ারি বহিস্কার করা হলেও প্রেস বিজ্ঞপ্তি গতকাল বুধবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় রাজনীতির গ্রুপিংয়ের জন্য সংগঠনটির জেলার সভাপতি-সম্পাদক এই বিষয়ে কোন মন্তব্য না করলেও বহিস্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগী) শামীম আল সাইফুল সোহাগ। জাহিদ হোসেন মিলন যশোর পৌরসভার ৪ নাম্বার ওয়ার্ড কাউন্সিলর। তাঁর বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একাধিক মামলা আছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন। এই সংগঠনের ভাবমূর্তি বজায় রাখার দায়িত্ব সবার। জেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জাহিদ হোসেন মিলন গঠনতন্ত্র পরিপন্থী ও শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকান্ডের দায়ে গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ও শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকান্ডের প্রমাণ রয়েছে। যা সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষণ্ন ও শৃঙ্খলা বিনষ্ট করেছে। অতএব গঠনতন্ত্রের ২২ (ক) ধারা মোতাবেক যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ এর নির্দেশে জেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক থেকে জাহিদ হোসেন মিলনকে সংগঠন থেকে সাময়িক অব্যহতি প্রদান করা হলো। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ও শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকান্ডের জন্য বহিস্কার করা হলোও সুুনিদিষ্টভাবে কোন অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয়নি।

এই বিষয়ে জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরি ও সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু কোন মন্তব্য করতে রাজী হয়নি। তবে যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগী) শামীম আল সাইফুল সোহাগ বলেন, ‘সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে যশোর জেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক পদ থেকে জাহিদ হোসেন মিলনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল সাময়িক বহিষ্কারের ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।’

স্থানীয় যুবলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বুধবার রাতে যশোর শহরের পালবাড়ি মোড়ে তাঁর ব্যক্তিগত কার্যালয় থেকে জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে টাক মিলনসহ চারজনকে ‘মদ্যপ’ অবস্থায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ঘটনার দিন রাতেই যশোর কোতোয়ালি থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে তারা যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারেই রয়েছে। গ্রেপ্তার অপর তিনজন হলেন শহরের টালিখোলা এলাকার শেখ দস্তগীর হোসেন (৪৪), কদমতলা এলাকার শফিকুল ইসলাম (৩৭) ও টালিখোলা এলাকার মারুফুজ্জামান (৩৯)। তাঁরা কাউন্সিলর জাহিদ হোসেনের সহযোগী।

জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়,  গত বুধবার রাতে রাত পৌনে আটটার দিকে স্থানীয় জনগণের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে যে যশোর শহরের পালবাড়ি এলাকার একটি ভবনের কক্ষে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি মদ্যপ অবস্থায় নিজেদের মধ্যে গোলযোগ করছেন। এরপর পুলিশ সেখানে হাজির হয়ে পৌর কাউন্সিলর জাহিদ হোসেনসহ তাঁর ওই তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে। জাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ আছে। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হলে দুবাই চলে যান তিনি। নাগালের বাইরে থাকায় তখন গ্রেপ্তার করতে পারেনি যশোরের পুলিশ। দুবাই থেকে দেশে ফেরার পথে জাহিদকে হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ইমিগ্রেশন পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে শহরের পুরোনো কসবা কাজীপাড়া এলাকার যুবলীগ কর্মী শরিফুল ইসলাম ওরফে সোহাগকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। অভিযোগ রয়েছে, ওই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন জাহিদ হোসেন। ওই মামলায় আটক এক আসামির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে জাহিদের নাম উঠে আসে। এ ছাড়া একাধিক মামলা আছে তাঁর বিরুদ্ধে।

জাগো/জেএইচ 

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ