তদারকির অভাবে যশোর সড়ক ও জনপদ বিভাগের ২০ যাত্রী ছাউনীতে গড়ে উঠেছে চায়ের দোকান বা ট্রাক, ইজিবাইক-রিকশা স্ট্যান্ড। যাত্রী ও পথচারিদের সুবিধাতে তৈরি এই ছাউনীগুলো দখল হয়ে যাওয়ায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে যেখানে-সেখানে। ফলে অনেক সময় ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে নারী ও শিশুদের। অন্যদিকে রাতে বেলা এসকল যাত্রী ছাউনী হয়ে ওঠে মাদকসেবীদের নিরাপদস্থান।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, যশোর পালবাড়ি থেকে অভায়নগরে রাজঘাট পর্যন্ত যশোর সড়ক ও জনপদ বিভাগের ২০ যাত্রী ছাউনী রয়েছে। এগুলোও ঠিকমতো দেখভাল করা হয় না বলে অভিযোগ আছে। পথচারীরা অভিযোগ করেন, প্রখর রোদ কিংবা হঠাৎ বৃষ্টি থেকে বাঁচতে বা গন্তব্যে পৌঁছানোর গাড়ি না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করার জন্য এসব যাত্রী ছাউনী। অথচ তারা এগুলো ব্যবহার করতে পারেন না।
সকাল ৯টায় বারবাজর দিক হতে আগত শাপলা পরিবহণ থেকে পালবাড়ি স্ট্যান্ডে নামে সাবিহা জান্নাত নামে এক শিক্ষার্থী। সাবিহা যশোর সিটি কলেজে অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশুনা করেন। সপ্তাহে তিনদিন বাসে চড়ে নিজ বাড়ি বারবাজার থেকে এসে কলেজ করেন তিনি। কিন্তু যাত্রী ছাউনী ইজিবাইক চালকদের দখলে থাকায় পাশের ফলের দোকানে পাশে যেয়ে দাড়িয়ে থাকতে হয় তার। সাবিহা জান্নাত বলেন, ছাউনী যাত্রীদের কোন সুবিধায় আচ্ছে না। বরং ওখানে গেলে বাজে কথা শুনতে হয় ইজিবাইক স্ট্যান্ডে লোকদের কাছ থেকে। তারা একা পেলেই বাজে ইঙ্গিতও করেন।’
পালবাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরত্ব আরবপুর মোড়। এখানে অবস্থিত সড়ক ও জনপদ বিভাগের আরও একটি যাত্রী ছাউনী। আর এই যাত্রী ছাউনী দখল করে রেখেছেন পাশে বাঁশ ব্যবসায়ীরা। বাঁশ আনা-নেওয়া করা ভ্যান রেখে দেয়া হয়েছে ছাউনীর নিচেয়। ফলে সাধারণ যাত্রী বা পথচারিরা ছাউনী ব্যবহার করে না। এখানে কথা হয় বাঁশ ব্যবসায়ী আলফাজ উদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, এখানে তেমন একটা লোকজন থাকে না। এজন্য আমাদের ভ্যান এখানে রেখে দেওয়া হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাত ১২টার দিকে এখানে মাদকসেবীরা আড্ডা দেয়। মাদকসেবীদের নিরাপদস্থান হয়ে উঠেছে। শুধু আরবপুর নয়; ধর্মতলার ছাউনীতেও মাদকসেবীরা আড্ডা দেয়।’
ধর্মতলা এলাকার বাসিন্দ আলিম বলেন, এখানে বড় ট্রাক, পিকাপ ও ইজিবাইক পার্কিং করে রাখে চালকরা। ফলে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বসার জায়গা পাই না অনেক সময়। তখন আশে-পাশের দোকানে মধ্যে বসতে হয় এসকল শিক্ষার্থীদের।’
এখানে ইজিবাইক চালক আনিসুর রহমান বলেন, আমাদের গাড়ি পার্কিং জায়গা নেই। এজন্য অনেক সময় এখানে ইজিবাইক বা রিকশা থাকে। তবে আমরা যাত্রীদের বিরক্ত করি না। বরং কেউ বিরক্ত করলে প্রটেক করি।’
যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রখর রোদ কিংবা বৃষ্টি থেকে বাঁচতে এসব যাত্রী ছাউনী তৈরি করা হয়েছে। আসলে দেখভাল করার মতো সুযোগ আমাদের খুব বেশি নেই।’
এবিষয়ে যশোরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) বেলাল হোসাইন বলেন, আমরা এই ধরণে কোন অভিযোগ আগে পাইনি। যেহেতু এখন জানতে পেরেছি, আমরা যাত্রী ছাউনীগুলোতে নজরদারি বৃদ্ধি করবো।’