মুক্ত বাংলার মাটিতে ১১ ডিসেম্বর যশোরে প্রথম জনসভা

আরো পড়ুন

বাঙালি জাতির জীবনে ১১ ডিসেম্বর একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবলমুক্ত যশোরে মুক্ত বাংলার প্রথম জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এই জনসভা ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বীকৃতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

এই জনসভায় প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ বক্তব্য রাখেন। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয়ের কথা ঘোষণা করেন এবং বিশ্ব নেতাদের প্রতি বাংলাদেশের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান।

এই জনসভায় প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয় আজ নিশ্চিত হয়েছে। আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছেছি। আমরা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন করেছি।” তিনি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান বাংলাদেশের ১ কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য।

প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা এখন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠনে মনোনিবেশ করব। আমরা সকলকে এই কাজে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানাই। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আর কখনও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি চলবে না।

এই জনসভার মাধ্যমে বিশ্ববাসী জানতে পারে যে, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। এই জনসভা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয়ের ঘোষণা: এই জনসভায় প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয়ের ঘোষণা করেন। এই ঘোষণা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেয় যে, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র।
বিশ্ব নেতাদের প্রতি বাংলাদেশের স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান: এই জনসভায় প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বিশ্ব নেতাদের প্রতি বাংলাদেশের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান। এই আহ্বানের প্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
বাংলাদেশের পুনর্গঠনে জনগণের আহ্বান: এই জনসভায় প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ সকলকে বাংলাদেশের পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতা যুদ্ধের পর দেশ পুনর্গঠনে একযোগে কাজ করে।

ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনের ঘোষণা: এই জনসভায় প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশের একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে গঠনের ঘোষণা দেন। এই ঘোষণার মাধ্যমে বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী চরিত্রের প্রতি বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

সুতরাং, ১১ ডিসেম্বর যশোরে অনুষ্ঠিত প্রথম জনসভা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই জনসভার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয় বিশ্ববাসীকে জানানো হয় এবং বাংলাদেশের পুনর্গঠনে জনগণের আহ্বান জানানো হয়।

জাগো/এসআই

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ