বেনাপোল স্থলবন্দর: স্ক্যানিং মেশিন নষ্ট, বেড়েছে পাচার

আরো পড়ুন

নিজস্ব প্রতিবেদক 

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে চোরাচালান ঠেকাতে ও যাত্রী পারাপার নিরাপদ করতে বসানো হয় চারটি স্ক্যানিং মেশিন। এগুলোর মধ্যে তিনটি চার মাস ধরে অকেজো পড়ে আছে। এতে এই বন্দর দিয়ে পাশের দেশ ভারতে যাওয়া-আসা করা যাত্রীদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ ও অন্যান্য সামগ্রী স্ক্যান করা সম্ভব হচ্ছে না।এদিকে স্ক্যানিং মেশিন নষ্ট থাকায় সম্প্রতি এই বন্দর দিয়ে সোনাসহ অন্যান্য পণ্যের চোরাচালান বেড়েছে বলে জানা গেছে। গত চার মাসে বেনাপোল বন্দর পেরিয়ে ভারতে যাওয়ায় পর সেখানকার পেট্রাপোল সীমান্তে সোনা ও বিভিন্ন চোরাই পণ্যসহ ২৫ পাচারকারী আটক হন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে চারটি স্ক্যানিং মেশিন স্থাপন করা হয়। এর একটি বসানো হয় বন্দরের বাইপাস সড়কে পণ্য প্রবেশের দ্বারে। অত্যাধুনিক মেশিনটি পণ্যবাহী ট্রাকে আসা রাসায়নিক, মাদক, অস্ত্র ও মিথ্যা ঘোষণার পণ্য শনাক্ত করতে সক্ষম। এ ছাড়া বেনাপোল চেকপোস্ট ও রেলস্টেশনের আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন-কাস্টমস রুটে চোরাচালান রোধে আরও তিনটি স্ক্যানিং মেশিন বসানো হয়। স্ক্যানিং মেশিনগুলো কাস্টমসের পক্ষে পরিচালনা করে আসছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাসোসিয়েটস। তবে মেশিনগুলোর মধ্যে তিনটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে চার মাস ধরে অকেজো পড়ে আছে। এতে বন্ধ হয়ে পড়েছে স্ক্যানিং কার্যক্রম।

গত চার মাসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, স্বর্ণ ও অন্যান্য পণ্যসহ ২৫ পাচারকারী আটক হন। এদের মধ্যে তিনজনকে বাংলাদেশ কাস্টমস ও বিজিবি সদস্যরা আটক করেন। বাকি ২২ জনকে আটক করেছে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী ১৫ জন, ভারতীয় পাসপোর্টধারী ৬ জন এবং ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের চালক রয়েছেন ৪ জন।

পণ্যবাহী ট্রাকের চালক আফজাল হোসেন বলেন, বন্দরে স্ক্যানিং মেশিনগুলো সচল থাকলে এভাবে চোরাচালান সম্ভব হতো না। বাংলাদেশ অংশে জরুরি ভিত্তিতে স্ক্যানিং মেশিন সচল করা দরকার। ভারতগামী বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী আব্দুর রহিম জানান, স্ক্যানিং মেশিন নষ্ট থাকায় অবাধে নানা পণ্য পাচার হয়ে ওপারে যাচ্ছে। চোরাচালান প্রতিরোধে কাস্টমস অনেকটা অসহায় পড়ে পড়েছে।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, স্ক্যানিং মেশিন নষ্ট থাকায় এ দেশ থেকে সোনাসহ মূল্যবান সম্পদ পাচার হচ্ছে ভারতে। সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, স্ক্যানিং মেশিন নষ্টের সুযোগে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে অতিরিক্ত পণ্য নিয়ে আসছেন কিছু নামধারী ব্যবসায়ী।

বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম জানান, এই স্থলবন্দর ব্যবহার করে প্রতিদিন ছয় হাজার পাসপোর্টধারী যাতায়াত করে। এ ছাড়া ছয় শতাধিক ট্রাকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয় ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে। বন্দর ও কাস্টমস ইমিগ্রেশনে স্ক্যানিং মেশিন নষ্ট থাকায় চোরাচালানের ঝুঁকি বাড়ছে।

স্ক্যানিং মেশিন তদারকিতে নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাসোসিয়েটসের বেনাপোল অফিসের ব্যবস্থাপক বনি আমিন বলেন, স্ক্যানিং মেশিন মেরামত করতে বড় অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন। চুক্তি অনুযায়ী কাস্টমস ব্যয় বহন করার কথা থাকলেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি। এতে তিনটি মেশিনে স্ক্যানিং কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

জাগো/জেএইচ

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ