হামার নামে ঘর উপহার দিছে। এলা হামরা ব্লিডিং ঘরত ছাও-পাও নিয়ে থাকি। হামরা (আমরা) স্বপ্নেও ভাবি নাই হরিজন হয়া বিল্ডিং ঘরত থাকমো (থাকবো)। আবেগাপ্লুত হয়ে এভাবে কথাগুলো বলেছিলেন কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার হরিজন পল্লীতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাওয়া রবি লাল ভাস্কর।
হামরা সারাজীবন মানুষের দোকানের বারান্দায়, রাস্তার ধারে, ময়লা আবর্জনা পরিবেশে বসবাস করছি। মানুষ হামাক মূল্যায়ন করে না, হামাক ঘৃণা করি আও করে না। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার হামারগুলার দুঃখ দুর্দশা চিন্তা করি হামাক মূল্যায়ন করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হরিজন সম্প্রদায়ের জন্য প্রথম কুড়িগ্রামে গড়ে তুলেছেন পল্লী। এ পল্লীতে এক একর জমি অধিগ্রহণ করে ৩০টি পরিবারের প্রায় দেড় শতাধিক হরিজনের থাকার ব্যবস্থা করেছেন। দুই রুম বিশিষ্ট প্রতিটি ঘরে আছে বারান্দাসহ একটি রান্না ঘর। আছে পানির সু-ব্যবস্থা। মনোরম পরিবেশে বসবাসে জন্য পল্লীর চারপাশে রোপণ করা হয়েছে সারিবদ্ধ গাছের চারা। যাতায়াতের জন্য প্রশস্থ রাস্তা, বৈদ্যুতিক স্ট্রিট লাইটসহ অন্য সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন।
জরাজীর্ণ ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে মুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত হচ্ছেন তারা। নিজেদের এমন আমূল পরিবর্তন হওয়ায় খুশি হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন এ হরিজন পল্লীর মানুষজন।
উপহারের ঘর পাওয়া পারুল ভাস্কর বলেন, হামার ছিল না জায়গা, ছিল না থাকার ঘর, ছাও-পাও নিয়ে কষ্টে ছিলাম। আগে ৮-১০ জন মিলে ছোট একটা ঘরে বা অন্যের দোকানের বারান্দায় রাত কাটতো। এখন আর সেই কষ্ট নাই। দিন শেষে হলেও একটা নিজস্ব থাকায় স্থান করে দিয়েছে সরকার। এখন হামরা শান্তিতে ঘুমাবার পাই।
আশ্রয়ণের ঘর পাওয়া মনি লাল ভাস্কর বলেন, ‘স্বপ্নে ভাবি নাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হামার জন্যে এতো সুন্দর দুটি ঘর, পানির ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা এবং ঘরের সামনে উঠান করে দেবেন। থাকার এত সুন্দর পরিবেশ পেয়ে হামরা খুবই খুশি হইছি।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল অরীফ বলেন, কুড়িগ্রামে প্রথম একটি হরিজন পল্লী গড়ে তোলা হয়েছে। এতে থাকবে খেলার মাঠ, শিশুদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা, এছাড়া ওই পল্লীকে আরও সৌন্দর্য বর্ধন ও একটি মডেল পল্লী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।