যশোর জেলা পরিষদ মার্কেট : দোকান বরাদ্দ নিয়ে দু’পক্ষ মুখোমুখি, সংঘর্ষের আশঙ্কা

আরো পড়ুন

যশোর জেলা পরিষদ ‘অনুমোদন’ ছাড়াই ৩৩টি দোকান স্থাপন শুরু করেছে। এ দোকান বরাদ্দ নিয়ে পুরানো ও নতুন ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা আছে।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মার্কেটে পুরানো ব্যবসায়ীরা দোকান নির্মাণ কাজ শুরু করলে জেলা পরিষদ বাধা দেয়। এ সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ কারণে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

অভিযোগ উঠেছে, পুরাতন ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিক দোকান বরাদ্দ না দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নতুন ব্যবসায়ীদের কাছে দোকান বরাদ্দ দিচ্ছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও তার ছেলে।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে যশোর জেলা পরিষদ কার্যালয় প্রাঙ্গণে ও যশোর ইনস্টিটিউট মাঠের এক প্রান্তে পুরাতন কাপড়ের ব্যবসা করে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সম্প্রতি যশোর ইনস্টিটিউটের মাঠ উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শুরু করলে ইনস্টিটিউট অংশের ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদকালে মৌখিকভাবে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় উন্নয়নকাজ শেষ হলে এসব ব্যবসায়ীদের জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণের মার্কেটে জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হবে। সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সোমবার পুরোনো ব্যবসায়ীরা জেলা পরিষদ মার্কেটে দোকান তৈরি শুরু করেন।

এক পর্যায়ে জেলা পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দোকান নির্মাণে বাধা দেন। এ সময় জেলা পরিষদ কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের জানান, এখানে প্রতিটি দোকান নির্মাণ করতে হলে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা দিতে হবে। জেলা পরিষদের কর্মকর্তা বাধা দিলে জেলা পরিষদ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

যশোর ইনস্টিটিউট মার্কেট অংশের সভাপতি বাবু বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, ইনস্টিটিউটের মাঠ থেকে যখন আমাদের উচ্ছেদ করা হচ্ছিল তখন বলা হয়েছিলো জেলা পরিষদের মার্কেটে আমাদের স্থান দেওয়া হবে। সেই মোতাবেক ১২ ব্যবসায়ী সরে আসি। আজ জেলা পরিষদের মার্কেটে দোকান নির্মাণ করতে এলে আমাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। এখন দোকান নির্মাণ করতে দেবে না। উল্টো তিন থেকে চার লাখ টাকা প্রতিটি দোকানের জন্য দিতে হবে জেলা পরিষদকে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের জন্য বরাদ্দ জায়গা পুরাতন ব্যবসায়ীদের আগে অগ্রাধিকার না দিয়ে জেলা পরিষদ নতুন ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে। নতুন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তিন থেকে চার লাখ টাকার বিনিময়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল ও তার ছেলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লব দোকান বরাদ্দ দিচ্ছে বলে জানতে পেরেছি।

নাজমুল হোসেন নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা করি পুরোনো কাপড়ের ব্যবসা। এত টাকা দিয়ে দোকান বরাদ্দ নেবো কীভাবে। জায়গা না দিলে আমরা ব্যবসা করবো কীভাবে। আমাদের জায়গা নতুন ব্যবসায়ীদের কাছে বরাদ্দ দিলে আমরা আন্দোলনে যাবো।

এ বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ কে এম শফিকুল আলম বলেন, দোকান বরাদ্দকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীদের দু’পক্ষ জড়ো হতে থাকে। এ সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান বলেন, অস্থায়ী মার্কেট নির্মাণ করতে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নেওয়া লাগে না। আমরা নিজেরাই অনুমতি দিতে পারি।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল বলেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জায়গা বরাদ্দ নিয়ে আমাদের কোনো চুক্তি ছিল না। নতুন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক দোকান বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।

মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নতুনদের কাছ থেকে বাবা-ছেলের দোকান বরাদ্দের প্রসঙ্গ তিনি বলেন, তাদের অভিযোগ মিথ্যা।

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ