যশোরের পুলেরহাট থেকে রাজাগঞ্জ, কেশবপুর পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা

আরো পড়ুন

যশোর শহরতলীর পুলেরহাট থেকে রাজগঞ্জ হয়ে কেশবপুর পর্যন্ত সড়কটি সংস্কারের অভাবে বেহাল দশায় রুপ নিয়েছে। নির্মাণের পর যশোর অংশের ৩২ কিলোমিটার সড়কে কোন সংস্কার বা পুন:নির্মানের কাজ করা হয়নি। ফলে প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে চলাচলরত যানবাহন ও যাত্রীদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ আঞ্চলিক সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।

সাতক্ষীরা জেলা শহরসহ খুলনার চুকনগর, যশোরের কেশবপুর ও মনিরামপুরে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এ সংযোগ সড়ক। যাতয়াতে কম সময় লাগায় এ সড়কটি ব্যবাহার করে থাকে ব্যস্ততম যাত্রী সাধারণরা। শুধু তাই নয় পাইকগাছা, কেশবপুর ও সাতক্ষীরা থেকে ঢাকাগামী যানবহনও এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে।

পুলেরহাট- রাজাগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের দুপাশে বসবাসরত বাসিন্দারা জানান, বেশ কয়েকবছর আগে এ সড়কটি নির্মান করা হয়। এরপর থেকে এ সড়কে কোন সংস্কার কাজ করা হয়নি। সংস্কার কাজের অভাবে এ ৩২ কিলোমিটার সড়কের দোদাড়িয়া বাজার হতে রাজাগঞ্জ বাজার পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়কের অবস্থা বেশ ভয়াবহ। এ তিন কিলোমিটার সড়কে বড় বড় খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বাকি ২৯ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা ফুলে ফেঁপে উঠে ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও পিচ এবং ইটের খোয়া উঠে মাটির রাস্তায় পরিনত হয়েছে। এলাকাবাসীরা অভিযোগ করছেন সড়ক নির্মানের সময় দূর্নিতী ও অনিয়ম হওয়ায় এ সড়কটি ব্যবাহারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

দোদাড়িয়া গ্রামের আকরাম হোসেন বলেন, এই রাজাগঞ্জ সড়ক দিয়ে মনিরামপুর, কেশবপুর, সাতক্ষীরায় যাতায়াতে সহজ হওয়ায় প্রতদিন দশ থেকে ১২ হাজার মানুষ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। তাছাড়া ছোট বড় ভারি যানবহনও এ সড়ক দিয়ে নিয়মিত চালচল করে। এটি আঞ্চলিক সড়ক হলেও দিনে-রাতে মহাসড়কের মতো গাড়ির চাপ থাকে।

তালতলা গ্রামের বাসিন্দা আকবর আলী বলেন, এ সড়ক দিয়ে ভ্যান ইজিবাইকে চলাচলও মুশকিল হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি হলেই খানা-খন্দে পানি জমে থাকে। কোন রোগী নিয়ে চলাচল করা ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

মোটরসাইকেল চালক আলতাফ হোসেন বলেন, তালতলা বাজার পার হয়ে সড়কের জায়গায় জায়গায় বড় বড় গর্ত। দুদিন করে রাতের অন্ধকারে গর্তে মোটরসাইকেলের চাকা পড়ে দূর্ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকে এ সড়কে মোটরসাইকেল চালাতে খুব ভয় করে।

স্কুলছাত্র অনিক বিশ্বাস বলে, আমরা বাইসাইকেলে করে স্কুলে যাওয়ার সময় পাশ দিয়ে কোন বড় গাড়ি গেলে কাদা পানি ছিটকে গায়ে লাগে। তা বাদে ভাঙা চোরা সড়ক দিয়ে আমাদের চলাচলে অনেক অসুবিধা হয়।

এদিকে গত কয়েক বছর আগে এ সড়কি নির্মান করার সময় দূর্নিতী এবং ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় অল্প দিনের রাস্তার এ বেহাল দশা সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। খেদাপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, এ সড়কটি কয়েক বছর আগে নির্মান করা। এতো দ্রুত সড়কটি নষ্ট হওয়ার কথা নয়। সড়ক নির্মাণের কাজে নয়ছয় করার কারণে এমনটা হয়েছে।

যশোর এলজিইডি সুত্রে জানা গেছে, যশোর শহরতলীর পুলেরহাট থেকে রাজাগঞ্জ হয়ে কেশবপুর পর্যন্ত যশোর অংশে মোট ৩২ কিলোমিটার এ আঞ্চলিক সড়ক। এর মাঝে কিছু কিছু অংশে সড়ক ও জনপথের রাস্তা রয়েছে। বিদেশী প্রকল্পের মাধ্যমে এ সড়ক সংস্কারের উদ্দ্যেগ গ্রহন করা হয়েছে।

যশোর এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম বলেন, বিদেশী ইউকেয়ার নামক একটি প্রকল্পের মাধ্যমে পুলেরহাট থেকে রাজাগঞ্জ হয়ে কেশবপুর পর্যন্ত যশোর অংশের ৩২ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের উদ্যােগ নেওয়া হয়েছে। এ কাজের মেয়াদ রয়েছে দেড় বছর। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। প্রায় ৯০ কোটি টাকা ব্যায়ে এ সংস্কার কাজ করা হবে।

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ