বিকল ট্রলারে তিন দিন ধরে সাগরে ভাসছেন ১৭ জেলে

আরো পড়ুন

বঙ্গোপসাগরের মান্দারবাড়িয়ায় ‘এফবি মা’ নামে একটি মাছ ধরা ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হয়ে ১৭ জেলে তিন দিন ধরে ভাসছেন।

বৃহস্পতিবার উপকূলের জেলে মহাজন গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, বরগুনা জেলার পাথরঘাটার বাদুরতলা গ্রামের ছালাম দোকানদারের মালিকানাধীন ‘এফবি মা’ ট্রলারটি ১৭ জন জেলে নিয়ে ১০ সেপ্টেম্বর মাছ ধরার জন্য পাথরঘাটা থেকে সাগরে যাত্রা করে যায়। দুই দিন পরে ট্রলারটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে বঙ্গোপসাগরের মান্দারবাড়িয়া এলাকায় ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। ট্রলারের মাঝি জামাল মিয়া বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে এই তথ্য জানান। সাগরে মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় এই কয়দিনের মধ্যে শুধু এই তথ্যটুকু তারা জানাতে পেরেছেন। ট্রলারে থাকা ১৭ জন জেলের বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

এ বিষয়ে পাথরঘাটা কোস্টগার্ড স্টেশন কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মাসুদুর রহমান মোড়ল বলেন, ‘আমরা তথ্য পেয়েছি এবং তাদের উদ্ধারের জন্য মোংলা কোস্টগার্ডের সদস্যরা কাজ শুরু করেছেন। বঙ্গোপসাগরের যে এলাকায় ট্রলারটি বিকল হয়েছে সেই এলাকা বাগেরহাট জেলার অন্তর্ভু্ক্ত। তাই মোংলা কোস্টগার্ড স্টেশন তাদের সন্ধান শুরু করেছে এবং একাধিক টিম কাজ করছে।

এদিকে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপের কারণে মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। এর ফলে সাগর প্রচণ্ড উত্তাল রয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় মাছ ধরতে পারছেন না জেলেরা। এ অবস্থায় জানমালের ক্ষতি এড়াতে জেলেরা সুন্দরবন উপকূলে আশ্রয় নিয়েছেন তারা।

চলতি ইলিশ আহরণ মৌসুমের শেষ ভাগে এসে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ পড়তে শুরু করলে এ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় তা বন্ধ হয়ে গেছে। লঘুচাপের কারণে বুধবার সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টিপাত ও হালকা-মাঝারি ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে মোংলাসহ সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে। এতে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে উপকূল জুড়ে।

সাগরে ৬৫ দিনের মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা শেষে ১ সেপ্টেম্বর থেকে জেলেরা সাগরে নামলেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আকস্মিক এ লঘুচাপ। লঘুচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল হওয়ায় সুন্দরবনের দুবলার চর, আলোরকোল, নারকেলবাড়ীয়া ও ভেদাখালীসহ বিভিন্ন খালে অবস্থান করছে শত শত ট্রলারের হাজার হাজার জেলে-মাঝিমাল্লা।

বাগেরহাটের শরণখোলার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার কবির হাওলাদার বলেন, একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ অপরদিকে সাগর ও সুন্দরবনে দফায় দফায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞায় আমরা জেলেরা এখন একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছি। আর দুর্যোগ তো আমাদের পেছনে লেগেই আছে। যখনই ইলিশ জালে পড়া শুরু হয়, তখনই দুর্যোগ হানা দেয়। দুর্যোগের কারণে আমার আড়তে পাঁচটি ট্রলার মালিক চলতি ইলিশ আহরণ মৌসুমে কম হলেও ৫০ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছেন। ইলিশ মৌসুমও একন প্রায় শেষ পর্যায়ে, তার মধ্যে আবার দুর্যোগ হানা দিয়েছে। তাই এ বছর আর লোকসান কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না।

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ