বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাসিম বলেছেন, বিএনপি-জামাত ৪৫ বছর যাবৎ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করেছে। তাই আজকে তাদের করুণ পরিণতি হয়েছে। এমন পরিণতি যে আজকে তারা সিপাহী জনতার বিপ্লবের কোনো কর্মসূচি পালন করার সক্ষমতা তাদের নেই। তারা পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে এ কর্মসূচি পত্যহার করেছে। তার মানে এতদিন পরে তাদের বোধোদয় হয়েছে। তারা কথাকথিত সিপাহী বিপ্লবের নামে খুনের রাজনীতি করেছে। সেই রাজনীতিকে তারা অস্বীকার করছে বা বিশ্বাস করেনা অথবা তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব এতোই বিপন্ন হয়েছে যে এখন তাদের নূন্যতম রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করার সক্ষমতা নাই।
৭ নভেম্বর খুনি জিয়া কতৃক সেনাবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস ও বিএনপির আগুন সন্ত্রাস, পুলিশ হত্যা এবং সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে মঙ্গলবার বিকালে দড়াটানা ভৈরব চত্বরে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাসিম আরও বলেন, বিএনপির ষড়যন্ত্রের, ভোট চুরির, ধ্বংসের, চাঁদাবাজির ও হত্যার রাজনীতি ও জামাতের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি দেশের বিরুদ্ধে মানুষের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে তারা রাজনীতি করছে। তাদের সেই অপরাজনীতির বিরুদ্ধে সারা বাংলাদেশের মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ জেগে উঠেছে। আমরা জানি যশোরের মানুষ সংগ্রামী মানুষ, লড়াকু মানুষ। তাই আজকের এ সমাবেশে শেখ হাসিনার প্রতি ভালোবাসা থেকেই জেগে উঠেছে। মাত্র ১০ ঘণ্টার প্রস্তুতিতে হাজারও মানুষ সমবেত হয়েছে। তাই বিএনপি-জামাতকে বলেদিতে চাই, এ দেশে যারাই ধ্বংস ও নাশকতার রাজনীতি করবে তাদেরকে আমরা যে কোনো মূল্যে তাদের প্রতিহত করবো। এটাই চূড়ান্ত কথা। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করবে, দেশের উন্নয়নকে বাঁধাগ্রস্ত করবে তাদের আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না। জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশে কোনো মৌলবাদী শক্তিকে আর কোনো রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। আমাদেরকে আরও সতর্ক হতে হবে। তিনি আরও বলেন আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই। আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারও ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত সবাই সজাগ থাকবেন। বাংলাদেশের যে উন্নয়ন ধরা অভ্যাহৃত আছে সে ধরা অভ্যাহৃত রাখার জন্য যাকেই নৌকা দেওয়া হবে তাকে বিজয়ী করার জন্য সকলকে কাজ করতে হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল আলম মিলনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক। তিনি এ সময় বলেন, যারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যায় সহযোগিতা করেছিলো তারাই ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে জিয়া ও মুস্তাক বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসে। একদিকে জিয়া সেনাবাহিনীর প্রধান ও অন্যদিকে স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি হয়ে ক্যান্টনমেন্ট বসে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকা খরচ করে আলবদর-আল শামস, রাজাকারদের নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করে। আর সে রাজনৈতিক দলের নাম বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। আর বিএনপি সৃষ্টির পর থেকে স্বাধীন বাংলাদেশকে পাকিস্তানি বানানোর জন্য ষড়যন্ত্র করত। আজকে ৭ নভেম্বর জিয়াউর রহমান সামরিক অভ্যুত্থানের অজুহাত তুলে সেদিন সেনাবাহিনীর ভিতরে যে সকল মুক্তিযোদ্ধা ছিলো তাদের হত্যা করে। বিএনপি আজকে যে দিবস পালন করত সে দিবস তারা পালন করতে ভয় পচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলে দেশের মানুষ খাদ্য, বস্ত্রসহ বাস স্থানের জায়গা পাবে, চিকিৎসা সেবা পাবে। সে স্বপ্ন তার কন্যা শেখ হাসিনা আজকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে সে স্বপ্ন পূরণ করছে।
বাংলাদেশ আওয়ালীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, তারেক জিয়া বিদেশে বসে বিলাসবহুল জীবন যাপন করছে আর পাকিস্তানের আইএসআইয়ের সাথে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ১৯৭১ সালে যেমন পাকিস্তান টার্গেট করে হামলা করেছিলো। তেমনি বিএনপিও ২৮ তারিখে পুলিশ ও হাসপাতালের উপর হামলা করেছে। বিএনপি জামাত অবরোধের নামে আগুন সন্ত্রাসী করে। এরা পুলিশ হত্যা করে। সাংবাদিকদের মারপিট করে। এরা সন্ত্রাসীদের, জঙ্গীবাদের দল। এরা মুক্তিযোদ্ধা বিরোধী দল। এ কারণে বিএনপির নেতাদের ঘর থেকে ধরে এনে পুলিশের নিকট ধরিয়ে দিতে হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জী বলেন, বিএনপি হত্যা ও কু’র রাজনীতির মাধ্যামে বাংলাদেশে রাজনীতি শুরু করেছিলো। আর বঙ্গবন্ধু কন্যা তার বিপরীত রাজনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশে উন্নয়ন করছেন। যার উদাহরণ আপনারা আগামী ১৩ তারিখে খুলনার সমাবেশে মানুষের উপস্থিতির মাধ্যামে দেখতে পাবেন।
যশোর -৬ ( কেশবপুর ) আসনের সংসদ সদস্য ও যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি বলেন, এতো দিন আন্দোলন করছি আপনারা সাথে থাকছেন। আন্দোলন সফল হয়েছে। গতকাল অবরোধ শেষে সন্ধ্যায় মনিহারের সামনে ও সার্কেট হাউজের উপরেও কোকটেল মারেছে সন্ত্রাসীরা। আপনারা কি ললিপাপ চোষেন। এই কোকটেল এবং আগুন সন্ত্রাসীদের যেখানেই পাওয়া যাবে সেই জায়গায় তাদের সাইজ করতে হবে। এটা সবার মাথায় রাখতে হবে। এই যশোর হচ্ছে শান্তি আর স্বস্তির যশোর। এ শান্তির যশোরকে অশান্ত করার চেষ্ঠা করছে। সে কারণে আপনাদের বলবো ১৩ নভেম্বার খুলনা বিভাগীয় জনসভায় বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসবেন। আপনারা যশোর থেকে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনসভাকে সফল করার মধ্য দিয়ে এই খুলনা বিভাগে আর কোন হরতাল অবরোধ করতে দেওয়া হবে না।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, বিএনপি চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলো ২৮ তারিখের পর তারা রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকবে কিন্তু এখন তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। বিএনপি যদি সন্ত্রাস করে তাদেরকে তার সমচিত জবাব জনগণ দেবে।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, যশোর পৌরসভার মেয়র মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিত কুমার নাথ, জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সূর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জোৎস্না আরা মিলি, যুবলীগ নেতা হাজী আলমগীর কবির সুমন, সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান মাহামুদ বিপুল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রওশন ইকবল শাহী।
আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান মিন্টু ,এসএম হুমায়ুন কবীর কবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর জহুরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী রায়হান, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাভোকেট গাজী আব্দুল কাদের, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ফারুক আহমেদ কচি, শ্রম সম্পাদক কাজী আবদুস সবুর হেলাল, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়খ সম্পাদক হিসেবে সুখেন মজুমদার, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ আতিকুর বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম আফজাল হোসেন, মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, কৃষি ও সমবায় বিষায়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু সেলিম রানা, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পদাক ডা. এমএ বাশার, উপ দপ্তর সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম তরফদার, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক লুৎফুল কবীর বিজু, সদস্য আসাদুজামান মিঠু, মারুফ হোসেন খোকন, সামির ইসলাম পিয়াস,নাজমা খনম, প্রভাষক ফারুক হোসেন, আরশাদ পারভেজ, প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন, আনোয়ার হোসেন মোস্তাক, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ, সহ-সভাপতি ফিরোজ খান, এহসানুল হক লিটু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহারুল ইসলাম এছাড়াও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, মহিলালীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন । অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহমুদ হাসান বিপু।