চৌগাছায় স্ত্রী ও ছেলের অত্যাচারে বাড়ি ছাড়া মুজিদ ফিরতে চাই বাড়ীতে

আরো পড়ুন

যশোরের চৌগাছায় আব্দুল মুজিদ বিশ্বাস (৭৫) নামে এক ব্যক্তি তার পৈত্রিক ভিটায় বাড়ীতে ফিরতে চান। ৮ অক্টোবর এ ব্যাপারে তিনি চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে বাড়ি ফিরার জন্য লিখিত আবেদন করেছেন।

আব্দুল মুজিদ উপজেলার হাজরাখানার গ্রামের মৃত হানেফ আলী বিশ্বাসের ছেলে। বর্তমানে তিনি চৌগাছা পৌর শহরের উপজেলা পাড়ার বাসিন্দা।

নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে আবেদনে আব্দুল মুজিদ জানান, আমার স্ত্রী রাশেদা বেগম। আমাদের সংসার জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ে। স্ত্রীর পরামর্শে হাজরাখানা গ্রামের আমার পৈত্রিক জমিজমা বিক্রি করে পৌর শহরের উপজেলা পাড়ায় ৭ সাত শতক জমি ক্রয় করি। সে সময়ে আমার স্ত্রী ঐ জমি তার নামে না দিলে আমার সংসার ছেড়ে চলে যাবে বলে হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে জমি তার নামে রেজিস্ট্রি করে দিই। পরে ঐ জমিতে বসবাসের জন্য বাড়িও নির্মাণ করি। পরবর্তীতে বাড়ীর পাশেই আরো এক বিঘা (৩৩ শতক) জমি ক্রয় করি। ২০২০ সালে এসে সেই ৩৩ শতক জমি ২৫ লাখ টাকায় বিক্রি করি। সে টাকাও আমার স্ত্রী আমার উপর চাপ সৃষ্টি করে নিজ নামে পোষ্ট অফিসে এফডি আর করে রেখেছে। এরই মধ্যে বাকী জমিজমা বিক্রি করে মেয়ে ও ছেলেকে এম এ পাশ করিয়ে বিয়ে দিই। বর্তমানে ছেলে স্বাস্থ্য বিভাগ ও জামাই ব্রাকের আর এম ও পদে চাকুরী করে।

তিন আরো বলেন, বর্তমানে স্ত্রী ও ছেলে মিলে আমাকে অত্যাচার করে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আমি চৌগাছা পৌর শহরের একটি বরফ ফ্যাক্টরীতে দৈনিক ১৫০ টাকা হাজিরায় কাজ করছি। ৩ বেলা শহরের একটি হোটেল থেকে ২০/২৫ টাকার খাবার খেয়ে ঐ বরফ ফ্যাক্টরীতেই রাত যাপন করি। বয়সের ভারে শরীর আর চলতে চাই না। ইতিমধ্যে বিভিন্ন রোগে বাসা বেঁধেছে শরীরে। রাতে ঘুম আসে না। মনে হয় এই বুঝি শরীর থেকে প্রাণ বেরিয়ে যাবে। শেষ হবে পৃথিবীর সকল পাওয়া না পাওয়ার আশা।
স্ত্রী-ছেলে মিলে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার পর বেঁচে আছি তাই বাবার ভিটায় হাজরাখানা গ্রামে যায়। সেখানে আমার পৈত্রিক ভিটায় ৭ শতক জমি রয়েছে। বাবার ভিটায় মাথা গোজার ঠাঁই করতে আমি ওই জমিতে ঘর বাঁধতে যায়। সেখানেও স্ত্রী-ছেলে ও ভাইপোরা মিলে আমাকে অত্যাচার করে তাড়িয়ে দিয়েছে।

সম্প্রতি হাজরাখানা গ্রামে বলুর মেলা হয়ে গেল, সেই মেলায় আমার জমিতে ভাড়ায় মেলার দোকান বসিয়ে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। এ টাকা আমি চাইতে গেলে আমাকে শারিরক ভাবে লঞ্চিত করে। বর্তমানে সহায়-সম্বল হারিয়ে আমি মানবতার জীবন যাপন করছি। কোন উপায় না পেয়ে ৮ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে লিখিত আবেদন করি। যাহাতে আমি আমার দেওয়া- নগদ ২৫ লাখ টাকা ফেরত ও গ্রামের পৈত্রিক জমিতে ঘর করে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কাটাতে পারি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তার স্ত্রী রাশেদা বেগম বলেন, তাকে তাড়িয় দেওয়া হয়িন, তিনি প্রায় প্রায় বাড়ি ছেড়ে এভাবে এদিক সেদিক যেয়ে থাকেন, আবার দুই তিন মাস পর বাড়ি ফিরে আসেন। আমরা তার সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করিনি।

চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, এ ধরণের একটি আবেদন পেয়েছি শুনানির জন্য নোটিশ করা হয়েছে।

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ