ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন-ভিত্তিক হামাস গোষ্ঠীর মধ্যে চলমান সংঘাতে কোনো অবস্থাতেই যুদ্ধবিরতির কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
রবিবার ইসরায়েলের এক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা বলেন, “ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের যত দ্রুত সম্ভব মুক্ত করতে চায়; কিন্তু সেজন্য গাজায় যুদ্ধবিরতির কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। কারণ, আমাদের মিশন হলো হামাসকে ধ্বংস করা এবং এমন কোনো পদক্ষেপ আমরা নিতে চাইছি না— যা এই মিশনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।”
ইসরায়েলের ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানে আমরা গাজায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানোর সুযোগ করে দিয়েছি। রাফাহ ক্রসিং খুলে গেছে। ইসরায়েলের অনেকেই তা পছন্দ করেনি, কিন্তু তারপরও আমরা এটি করেছি গাজার সাধারণ ফিলিস্তিনিদের জন্য; কিন্তু হামাসকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।”
গত ৭ অক্টোবর ভোরে ইসরায়েলের উত্তরাংশে সীমান্তবর্তী এলাকায় অতর্কিত হামলা চালায় হামাসের যোদ্ধারা। সেদিন শত শত ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের হতাহত করেন এবং ইসরায়েল থেকে দুই শতাধিক মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যান।
এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলি ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের নাগরিকরা রয়েছেন।
হামাসের এই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় মুহুর্মুহু বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েলে বাহিনী।
রবিবার লেবাননে এক সংবাদ সম্মেলনে হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা ওসামা হামাদান জানিয়েছেন, জিম্মিদের মুক্ত করতে হলে অবশ্যই গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা বন্ধ করতে হবে।
হামাসের সেই সংবাদ সম্মেলনের পর এই ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন ইসরায়েলের ওই কর্মকর্তা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন জানিয়েছেন, গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি ও জিম্মিদের মুক্তির ব্যাপারে সারাক্ষণ ইসরায়েলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বাইডেন প্রশাসন।
রবিবার মার্কিন এক সাক্ষাৎকারে ব্লিংকেন বলেন, “আমরা চাই প্রত্যেক জিম্মি নিজেদের পরিবারের কাছে ফিরে আসুক। ইসরায়েলের সঙ্গে এ ব্যাপারে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি এবং এক মুহূর্তের জন্যও জিম্মিদের মুক্ত করার ব্যাপারটিকে আমরা মনযোগের কেন্দ্র থেকে সরাচ্ছি না।”
সংঘাতের বর্তমান পরিস্থিতি
ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাতে গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন আরও ১ হাজারের বেশি মানুষ। অন্যদিকে, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে নিহত হয়েছে ১২ জন।
সংঘাতের কারণে গাজায় বিপুলসংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গাজায় প্রায় ৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতের অবিলম্বে সমাপ্তির আহ্বান জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, “আমরা চাই প্রত্যেক জিম্মি নিজেদের পরিবারের কাছে ফিরে আসুক। ইসরায়েলের সঙ্গে এ ব্যাপারে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি এবং এক মুহূর্তের জন্যও জিম্মিদের মুক্ত করার ব্যাপারটিকে আমরা মনযোগের কেন্দ্র থেকে সরাচ্ছি না।”
সংঘাতের সম্ভাব্য পরিণতি
এই সংঘাতের সম্ভাব্য পরিণতি এখনও অস্পষ্ট। তবে, এই সংঘাতের ফলে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন সম্পর্কের আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়াও, এই সংঘাতের ফলে মধ্যপ্রাচ্যে আরও অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।